আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় নেতৃত্বে সাধারণ তিনটি ধরন এবং তাদের সুবিধা ও অসুবিধাসমূ।
Table of Contents
নেতৃত্বে সাধারণ তিনটি ধরন এবং তাদের সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ
নিম্নে নেতৃত্বের সাধারন্ত তিনটি ধরন এবং তাদের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
প্রেষণাভিত্তিক নেতৃত্বঃ
প্রেষণাভিত্তিক নেতৃত্বের সুবিধাসমূহ-
(ক) এ নেতৃত্বের ফলে অধিকাংশ সময় কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি পায়, ফলে কর্মোদ্দীপনা সৃষ্টি হয়।
(খ) এ নেতৃত্বের কারণে কর্মীরা অধিক কাজে মনোযোগী হয়।
(গ) তারা পুরস্কারের আশায় অধিক পরিমাণে কাজ করে থাকে।
(ঘ) আবার কোন কোন সময় এ নেতৃত্বে ফলে কর্মীদের কর্মস্পৃহা সৃষ্টি হয়।
প্রেষণাভিত্তিক নেতৃত্বের অসুবিধাসমূহ-
(ক) কর্মীদের উপর প্রভুত্ব খাটানো হয় ফলে তারা কর্মস্পৃহা হারায়।
(খ) এ নেতৃত্বের কারণে কর্মীরা ভীত ও সমস্ত থাকে এবং কাজের প্রতি তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে
(গ) কর্মীরা নিজেদের গা, বাচানোর জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকে।
মৌল নেতৃত্ব ঃ
তত্ত্বাবধানের কেন্দ্রবিন্দুর ভিত্তিতে মৌল নেতৃত্বকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথা-
(ক) কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব এবং
(খ) কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব।
(ক) কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব
কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্বের সুবিধাসমূহ—
১। কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্বের ফলে কর্মীরা মানসিকভাবে সন্তুষ্ট থাকে ।
২। কর্মীদের মানসিক সন্তুষ্ট থাকার কারণে তাদের কর্মোদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। তারা একত্রে কাজ করতে আনন্দবোধ করে।
কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্বের অসুবিধাসমূহ-
১। মানুষ যেহেতু সামাজিক জীব, তাই এদের অধিক সুবিধা দিলে মাঝে মধ্যে বিপরীত ফল দেখা দেয়। ২। অনেক সময় একত্রে দলবেঁধে থাকে বিধায় তারা ভাল কাজ না করে অতিরিক্ত সময় নষ্ট করে।
(খ) কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব
কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের সুবিধাসমূহ—
১।এ পদ্ধতিতে অধিক উৎপাদনের সম্ভবনা থাকে।
২। এ নেতৃত্বে শ্রমিকদের অধিক সময় ব্যস্ত রাখা হয় ফলে তারা অন্যদিকে মন দিতে পারে না।
৩। এ নেতৃত্বের কারণে শ্রমিকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত কম লেগে থাকে।
কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের অসুবিধাসমূহ—
১।এ নেতৃত্বে শ্রমিকদের দিক তেমন বিবেচনা না করে শুধু উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে চায়
২। এখানে শ্রমিকদের উৎপাদনের যন্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে।
৩। এ নেতৃত্বে শ্রমিকদের দিকে তেমন খেয়াল দেওয়া হয় না, শুধু প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নেতা খেয়াল করে।
ক্ষমতাভিত্তিক নেতৃত্ব
ক্ষমতাভিত্তিক নেতৃত্বের সুবিধাসমূহ-
(ক) এ ধরনের নেতৃত্ব নেতা একাই সকল বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে বিধায় দ্রুততার সাথে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।
(খ) এ ক্ষেত্রে শ্রমিকেরা নেতার আদেশ নির্দেশ দ্রুততার পালন করে, ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
(গ) এ ধরনের নেতৃত্ব সকল ক্ষমতা নেতা সংরক্ষণ করে বিধায় শ্রমিকেরা সর্বদা তাকে ভয় করে এবং তাকে সমীহ
বা সম্মান করে চলে, ফলে প্রাতিষ্ঠানিক তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।
ক্ষমতাভিত্তিক নেতৃত্বের অসুবিধাসমূহ-
(ক) এ ধরনের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দানা বেধে উঠে। এতে তারা ধীরে চল নীতিতে উৎপাদন করে।
(খ) এ নেতৃত্বে নেতার ভয়ে প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও উৎপাদিত পণ্যের কোয়ালিটি নিম্ন মানের হয়।
(গ) এ নেতৃত্বের ফলে প্রতিষ্ঠানের আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়, কর্মচারীরা সেচ্ছাচারী হয় ও প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
আরও পড়ূনঃ