পরিকল্পনা অধ্যায়ে আলোচিত মূল পদবাচ্যসমূহ নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “ব্যবস্থাপনা নীতিমালা” বিষয়ের ” পরিকল্পনা” বিষয়ক পাঠের অংশ।
Table of Contents
পরিকল্পনা অধ্যায়ে আলোচিত মূল পদবাচ্যসমূহ
১. পরিকল্পনা (Planning):
ভবিষ্যত কার্যক্রমের পূর্বনির্ধারিত নক্সা বা চিত্রকে পরিকল্পনা বলে । ভবিষ্যতে কে, কখন, কোথায়, কত সময়ে, কী কাজ করবে তা ঠিক করা পরিকল্পনার আওতাধীন বিষয় ।
২. পরিকল্পনা অঙ্গন (Planning premises):
যে অবস্থার মধ্য দিয়ে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় তাকে পরিকল্পনা অঙ্গন বলে । এর যথার্থতার ওপর পরিকল্পনার কার্যকারিতা নির্ভর করে । লক্ষ্য
৩.(Goal):
লক্ষ্য হলো অভিপ্রায় যা অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠান চেষ্টা চালায়। সহজ অর্থে পরিকল্পনার অভিপ্রেত ফলকে লক্ষ্য বলে ।
৪. মিশন (Mission):
মিশন হলো এমন লক্ষ্য যা প্রতিষ্ঠান বা এর কোনো অংশের ভবিষ্যতে সম্পাদিতব্য মূল কাজসমূহের নির্দেশ করে ।
৫. স্থায়ী পরিকল্পনা (Standing plan) :
যে পরিকল্পনা একবার গৃহীত হওয়ার পর নতুন কোনো অবস্থার সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তা বারে বারে ব্যবহৃত হয় তাকে স্থায়ী পরিকল্পনা বলে ।
৬.একার্থক পরিকল্পনা (Single use plan) :
যে পরিকল্পনা শুধুমাত্র একবার ব্যবহারের জন্য বা একটি মাত্র উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রণয়ন করা হয় তাকে একার্থক পরিকল্পনা বলে । কর্মসূচি ও প্রকল্প এ ধরনের পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত ।

৭. প্রকল্প (Project):
কর্মসূচির বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিটা অংশকে প্রকল্প বলে । অর্থাৎ প্রকল্প হলো কর্মস আওতাধীন পদক্ষেপসমূহের মধ্যকার একটা বিশেষ পদক্ষেপ । আর্সেনিক দূষণ প্রতিরোধ কর্মসূচির অধীনে দূষিত টিউবয়েলসমূহ সনাক্তকরণ একটা প্রকল্প হতে পারে ।
৮.স্ট্র্যাটীজিক পরিকল্পনা (Strategic plan) :
প্রত্যাশিত সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠানে স্ট্রাটিজিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় তাকে স্ট্র্যাটাজিক পরিকল্পনা বলে ।
৯.কর্পোরেট স্ট্র্যাটিজি (Corporate strategy) :
কর্পোরেট বা নিয়ন্ত্রক (Holding) প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেরে অধস্তন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিচালনার জন্য যে দীর্ঘমেয়াদি স্ট্র্যাটিজি নির্ধারণ করা হয় তারে। কর্পোরেট স্ট্রাটিজি বলে ।
১০. প্রতিরক্ষামূলক স্ট্র্যাটিজি (Defensive strategy):
খরচ ও বাড়তি ঝামেলা কমিয়ে এবং প্রয়োজনে অপ্রয়োজনীয় বাড়তি সম্পদ হ্রাস করে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে একটা ভারসাম্যপূর্ণ ও নিয়ন্ত্রণ অবস্থায় নিয়ে এসে পরিচালনার স্ট্র্যাটিজিকে প্রতিরক্ষামূলক স্ট্র্যাটিজি বলে। এর উদ্দেশ্য হলো যাতে প্রয়োজনে ব্যবসায়কে গুটিয়ে নেয়া যায় বা অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সহজতর হয় ।
১১. আক্রমণাত্মক স্ট্র্যাটিজি (Offensive strategy):
যে কোনো পরিস্থিতি মেনে নেয়ার মানসিকতা নিয়ে স্ট্র্যাটীজীক লক্ষ্য অর্জনে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার কৌশলকেই আক্রমণাত্মক স্ট্র্যাটিজি বলে ।
১২. ব্যয় নেতৃত্বমূলক স্ট্র্যাটিজি (Cost leadership strategy ) :
পণ্য বা সেবার একক প্রতি ব্যয় প্রতিযোগীদের তুলনায় যথাসম্ভব কমিয়ে প্রতিযোগিতার সামর্থ্য বৃদ্ধির স্ট্র্যাটিজিকে ব্যয় নেতৃত্বমূলক স্ট্র্যাটিজি বলে ।
১৩. টো’জ বিশ্লেষণ/মেট্রিকস (TOWS Analysis) / Matrix) :
টো’জ মেট্রিক্স বা বিশ্লেষণ হলো বাহ্যিক হুমকি ও সুযোগ-সুবিধার সাথে অভ্যন্তরীণ শক্তি ও দুর্বলতার মিলকরণের একটা প্রণালীবদ্ধ বিশ্লেষণ পদ্ধতি, যাতে পরিবেশ-পরিস্থিতির সঠিক বিশ্লেষণ করে যথাযথ স্ট্রাটিজি গ্রহণ সম্ভব হয়।
১৪. সোট বিশ্লেষণ / মেট্রিকস (SWOT Analysis / Matrix):
সো’ট বিশ্লেষণ হলো অভ্যন্তরীণ শক্তি ও দুর্বলতার সাথে বাহ্যিক হুমকি ও সুযোগ-সুবিধার মিলকরণের একটা প্রণালীবদ্ধ বিশ্লেষণ পদ্ধতি; যাতে পরিবেশ-পরিস্থিতির সঠিক বিশ্লেষণ করে যথাযথ স্ট্র্যাটিজি গ্রহণ সম্ভব হয় ।
১৫. নীতি (Polity) :
কার্যক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সাধারণ নির্দেশনাকেই নীতি বলে । প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতি প্রদানের জন্য Promotion policy, বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নীতি কে Sales Policy- এভাবে নানান কাজে প্রয়োজনীয় নীতি নিরূপিত হয় । যা কার্যক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের পথ-নির্দেশনা প্রদান করে ।
আরও দেখুনঃ