অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন পদ্ধতি ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ৪র্থ অধ্যায়ের [Chapter 4] পাঠ।
অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন পদ্ধতি
অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলতে সরকার নির্ধারিত নিবন্ধকের অফিসে ব্যবসায়ের নাম তালিকাভুক্ত করাকে বুঝায়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট এলাকার নিবন্ধকের কার্যালয়ে রক্ষিত বইতে অংশীদারি ব্যবসায়ের নাম ও প্রয়োজনীয় তথ্য লিপিবদ্ধকরণকে অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলা হয় ।
১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের ৫৮ ধারা অনুযায়ী কোনো অংশীদারি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করতে হলে প্রথমত নিবন্ধকের অফিস হতে নির্ধারিত ফি জমাপূর্বক একটি ফর্ম/ আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। আবেদনপত্রটি যথাযথভাবে পূরণ করে চুক্তিপত্র ও গঠনতন্ত্রসহ নিবন্ধকের অফিসে জমা করতে হবে। সাধারণত আবেদনপত্রে নি লিখিত বিষয়সমূহ উল্লেখ করতে হয়—
১. অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের নাম;
২. প্রধান অফিসের ঠিকানা:
৩. অন্য কোথাও ব্যবসায়ের শাখা অফিস থাকলে তার ঠিকানা;
৪. ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য ও আওতা;
৫. ব্যবসায়ের মেয়াদ (যদি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য হয়);
৬. প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তারিখ;
৭. প্রত্যেক অংশীদারের নাম, ঠিকানা, পেশা
৮. অংশীদার হিসেবে যোগদানের তারিখ ইত্যাদি ।
আবেদনপত্রটি প্রত্যেক অংশীদার কর্তৃক বা তার উপযুক্ত / আইনগত প্রতিনিধি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে। নিবন্ধক আবেদনপত্র ও চুক্তিপত্রটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সন্তুষ্ট হলে ব্যবসায়টি তালিকাভুক্ত করবেন। চুক্তিপত্র কিংবা আবেদনপত্রের কোনো পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোগ ও বিয়োজন করতে হলে নিবন্ধকের অনুমতি নিতে হবে এবং তা সম্বন্ধে তাকে অবহিত করতে হবে।
অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন কি বাধ্যতামূলক (Is Registration of a Partnership Business Compulsory)
নিবন্ধন অংশীদারি ব্যবসায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক না হলেও বাঞ্চনীয় বটে। কারণ অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধিত হলে এর আইনগত ভিত্তি সুদৃঢ় হয় এবং ব্যবসায়িক কর্মকান্ড পরিচালনায় বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করে। নিবন্ধন অংশীদারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
অংশীদার ব্যবসায়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক না হলেও বাঞ্ছনীয় বটে। কারণ অংশীদারি ব্যবসায়ে নিবন্ধিত হলে পরবর্তীকালে অংশীদারগণের মধ্যস্থিত সম্ভাব্য কলহ অথবা তৃতীয় পক্ষের সাথে দেনা- পাওনা নিষ্পত্তির পরিপ্রেক্ষিতে সহায়ক হয়। নিবন্ধন করলে ব্যবসায়ের চুক্তিপত্রটি আইনসম্মত দলিলরূপে স্বীকৃতি লাভ করে। বস্তুত: নিবন্ধন অংশীদারি ব্যবসায়ের অস্তিত্ব প্রকাশ করে। তাছাড়া নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় কতকগুলো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে ।

অংশীদারি আইনের ৬৯ (১) ধারা মতে, অংশীদারি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত না হলে, বা নিবন্ধন বহিতে সংশ্লিষ্ট অংশীদারের নাম লিখিত না থাকলে কোনো অংশীদার অপর অংশীদার বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চুক্তি হতে উদ্ভূত অধিকার আদায়ের জন্য মামলা করতে পারবে না ।
পরিশেষে বলা যায় যে, অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধন আইনত বাধ্যতামূলক নয়। তবে অংশীদারগণ ভবিষ্যৎ সুযোগ-সুবিধার জন্যে নিবন্ধন করে নিতে পারে। কারণ সংগঠন নিবন্ধন করা বা না করা অংশীদারদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। তবে একথা সত্য যে, নিবন্ধন করা হলে কতিপয় আইনগত সুবিধা পাওয়া যায়। তাই এরূপ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করাই উত্তম।
অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন পদ্ধতি এর বিষয়বস্তুঃ
আরও পড়ূনঃ