ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্টে সরকারের বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে বিধান 

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় সরকারের বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে বিধান । এই পাঠটি “ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্টে” বিষয়ের “শ্রম ও শিল্প আইন” বিভাগের একটি পাঠ।

 

সরকারের বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে বিধান

 

সরকারের বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে বিধান 

 

কারখানা আইনের কতিপয় ধারায় কারখানা বিষয়ে কিছু বিশেষ ক্ষমতা সরকারের পক্ষে সংরক্ষণ করা হয়েছে। সরকার প্রয়োজন মনে করলে আইনানুগ ঘোষণা প্রদানের মাধ্যমে এরূপ ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারেন। নিম্নে একপ ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা করা হল ঃ

১। কারখানা শ্রমিকদের ন্যূনতম সংখ্যা পুনঃনির্ধারণ ঃ

কারখানা আইনের ৩(১) ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার সরকারি গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে এ মর্মে ঘোষণা প্রদান করতে পারেন যে, যেই স্থানে বিদ্যুৎশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বা এরূপ শক্তি ব্যবহার না করে উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে বা সাধারণভাবে পরিচালিত হয়ে থাকে এবং পাঁচজন বা ততোধিক শ্রমিক যেখানে কাজ করেছে বা পূর্ববর্তী ১২ মাসের মধ্যে কোন দিন কাজ করেছে সেই স্থানে অত্র আইনের বিধানসমূহ প্রযোজ্য হবে।

২। স্বতন্ত্র কারখানা ঘোষণা :

কারখানা আইনের ৪ ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার লিখিত আদেশ জারীর মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট কারখানার বিভিন্ন বিভাগ বা শাখাসমূহকে এক একটি আলাদা কারখানা হিসেবে ঘোষণা প্রদান করতে পারেন।

৩। আইনগত অব্যাহতি প্রদান ঃ

কারখানা আইনের ৫ ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট কারখানাকে বা কোন নির্দিষ্ট শ্রেণি বা বিবরণভুক্ত কারখানাসমূহকে জনস্বার্থের খাতিরে, অত্র আইনের সকল বা কোন বিশেষ বিধানের আওতা হতে প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অব্যাহতি প্রদান করতে পারেন। উল্লেখ্য, একযোগে ৬ মাসের অধিক সময়ের জন্য অব্যাহতি প্রদান করা যাবে না।

৪। মৌসুমি কারখানা ঘোষণা ঃ

কারখানা আইনের ৭ ধারায় বলা হয়েছে যে, যে কারখানায় সাধারণভাবে বছরে সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের বেশি উৎপাদন প্রক্রিয়া চালু থাকে না এবং নির্দিষ্ট মৌসুম ছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশের অনিশ্চয়তার কারণে উৎপাদন চালু রাখা সম্ভব হয় না, সেক্ষেত্রে সরকার সরকারি গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে উক্ত কারখানাকে মৌসুমি কারখানা ঘোষণা প্রদান করতে পারেন।

৫। পরিকল্পনা পূর্ব অনুমোদনের নির্দেশ ঃ

কারখানা আইনের ৮ (১-ক) ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার কোন কারখানা বা বিশেষ শ্রেণির কারখানা নির্মাণ বা সম্প্রসারণের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী প্রধান পরিদর্শকের (Chief Inspector) লিখিত পূর্ণ অনুমতি গ্রহণ আবশ্যক বলে নির্দেশ জারী করতে পারেন ।

৬। লাইসেন্স ও রেজিট্রেশন:

কারখানা আইনের ৮(খ) ধারার বলা হয়েছে যে, সরকার কোন কারখানা বা বিশেষ শ্রেণির কারখানার জন্য রেজিস্ট্রেশন বা লাইসেন্স সংগ্রহ আবশ্যক বলে ঘোষণা দিতে এবং নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী উ রেজিস্ট্রেশন যা লাইসেন্সের বা তার নবায়নের কি নির্দিষ্ট করতে পারেন।

(গ) কারখানা পরিদর্শক (Inspector of Pactories):

কারখানা আইনের বিধানসমূহ যথাযতভাবে কার্যকরী করা ও তত্ত্বাবধানের উদ্দেশ্য সরকার যদি কোন ব্যক্তি ১ হ্যক্তিবর্গকে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের কারখানাসমূহ পরিদর্শনের ক্ষমতা প্রদান করে তবে উক্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে কারবার পরিদর্শক বলা হয়।

 

google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

(ঘ) পরিদর্শক নিয়োগ (Appointment of Inspector) ঃ

সালের কারখানা আইনের ৯ ধারায় পরিদর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত বিধান প্রদত্ত হয়েছে-

১। সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে যোগ্য বলে বিবেচিত যে কোন ব্যক্তিকে কারখানাসমূহের পরিদর্শক হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন এবং নিয়োগকৃত প্রত্যেকের ক্ষমতাভুক্ত এলাকাও নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন। ধারা ১(২)।

২। সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে অত্র আইনের সকল বা কোন আংশিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য কোন সরকারি কর্মকর্তাকে পরিদর্শক হিসেবে নিয়োগ প্রদান ও তার কার্য এলাকা নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন। ধারা ৯(৩)।

৩। প্রত্যেক ডেপুটি কমিশনার (D.C) তার নিজ এলাকার জন্য কারখানা পরিদর্শক হিসেবে গণ্য হবেন। ধারা ১(৪)

৪। যারা কোন কারখানা বা কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া বা ব্যবসায় অথবা কারখানার সাথে সংশ্লিষ্ট কোন প্যাটেন্ট বা যন্ত্রপাতির সাথে প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পর্কযুক্ত বা যাদের স্বার্থ রয়েছে, তারা পরিদর্শক পদে নিযুক্ত হতে পারবে না বা পদে নিযুক্ত হয়ে থাকলে তাতে আর বহাল থাকতে পারবে না। ধারা ৯(৫)1

৫। কোন এলাকায় একাধিক পরিদর্শক নিযুক্ত হয়ে থাকলে সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে তানের প্রত্যেকের ক্ষমতার সীমা নির্দিষ্ট বা বণ্টন করে দিতে পারেন। ধারা ৯(৬)।

 

সরকারের বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে বিধান 

 

 

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment