অংশীদারি ব্যবাসায়ের গঠন

অংশীদারি ব্যবাসায়ের গঠন ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ৪র্থ অধ্যায়ের [Chapter 4] পাঠ।

 

অংশীদারি ব্যবাসায়ের গঠন

 

চুক্তির মাধ্যমে দুই বা তার বেশি সংখ্যাক মানুষ যখন মুনাফা লাভের আশায়, বৈধভাবে চুক্তি বদ্ধ হয়ে যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করে তাকে অংশীদারি ব্যবসা বলে। অংশীদারি ব্যবসার নিয়ম অনুসারে, একটি অংশীদারি কারবারে কম পক্ষে দুইজন ব্যক্তি ও সবথেকে বেশি কুড়ি (২০) জন ব্যাক্তি অংশীদার থাকা বাঞ্ছনীয়। বাংলাদেশ অংশীদারি ব্যবসা আইন ১৯৩২ অনুসারে এই মালিকানা আইনিভাবে স্বীকৃত করা হয়। এই আইন অনুসারে একজন ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত একটি ব্যবসা থেকে যখন অনেক ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ অবস্থায় মুনাফা লাভ করে, তখন সেই ব্যক্তিদের মধ্যে একটি চুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক তৈরি হয়।

 

 

অংশীদারি ব্যবসার মূল ভিত্তি কি?

প্রত্যেক অংশীদারি ব্যবসার মূল ভিত্তি হলো চুক্তি। অংশীদার ব্যক্তিগণের মধ্যকার চুক্তির বিষয়বস্তু যে দলিলে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে অংশীদারী চুক্তিপত্র বলে। এই চুক্তিপত্রে অংশীদারি ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য দিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। এই চুক্তিপত্র এমন ভাবে নির্ধারণ করা উচিত যেন ভবিষ্যতে সকল সমস্যার সমাধান করা যায়।

অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তি লিখিত, নিবন্ধিত, অনিবন্ধিত ও মৌখিক হতে পারে। তাই বলা হয় অংশীদারদের মধ্যে চুক্তি তাদের সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে উঠে। কারণ তাদের চুক্তি অনুযায়ী মূলধন বিনিয়োগ, পরিচালনার, লাভ লকসান বন্টন করা হয়। তাই চুক্তিই প্রত্যেক অংশীদারদের মধ্যে দায় ও অধিকার নিশ্চিত করে।

 

অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?

এই ধরনের ব্যবসায় অনেক গুলো বৈশিষ্ট্য থাকে, যার মধ্যে ব্যবসাকে এক মালিকানাধীন বা যৌথ মালিকানাধীন ব্যবসাকে পৃথক করে।

অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য গুলো হল –

(১) একের বেশি সদস্য সংখ্যা

এই ব্যবসায়ে সব সময় একের বেশি অংশীদারি থাকা জরুরি। যেহেতু ব্যবসার প্রধান সূত্র হলো অংশীদারিত্ব, তাই এক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ জন বা তার বেশি অংশীদারিত্ব থাকতে হবে।

(২) সদস্য সংখ্যার সীমাবদ্ধতা

এই ব্যবসায় সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ২০ জন নিয়ে অংশীদারি ব্যবসা করে ওঠে। সদস্যসংখ্যা এর বেশি বা কম হলে সেটা অংশীদারি কারবার হিসাবে স্বীকৃতি পাবে না।

(৩) চুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক

মনে রাখবেন, চুক্তি হলো অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি। যদি ওর অংশীদারিদের মধ্যে চুক্তি না থাকে, তাহলে এই ব্যবসায় কোন অস্তিত্ব থাকে না। তাই এই ব্যবসায় বেশ কয়েক ধরনের চুক্তি দেখা যায়। যেমন – লিখিত চুক্তি, মৌখিক চুক্তি, লিখিত ও মৌখিক উভয় চুক্তি।

(৪) মূলধন সরবরাহ

ব্যবসাতে অংশীদারগণ তাদের চুক্তি অনুযায়ী মূলধন সরবরাহ করে। যদি চুক্তি পত্রে উল্লেখ থাকে তাহলে মূলধন ছাড়াও ব্যবসায় অংশীদার হওয়া যায়। যেমন – নামমাত্র অংশীদার।

(৫) ব্যবসা পরিচালনায় অংশগ্রহণ

প্রত্যেক অংশীদারগণ ব্যবসা পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে, সকল অংশীদারিদের পক্ষ থেকে একজন অংশীদার ব্যবসা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করেন।

(৬) পারস্পরিক বিশ্বাস অর্জন

অংশীদারদের পারস্পরিক আস্থা, বিশ্বাস হলো অংশীদারি ব্যবসা অন্যতম বিশেষত্ব। অংশীদারি ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে একে অপরের নির্ভরশীলতা ও বিশ্বাসের উপর।

(৭) মুনাফা বন্টন প্রক্রিয়া

প্রত্যেক অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে সকল অংশীদারগণের মধ্যে সমান ভাবে মুনাফা বন্টন করা হয়। তবে, চুক্তিপত্রে যদি নিদিষ্ট কিছু বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয় তাহলে সেই চুক্তি অনুযায়ী মুনাফা বন্টন করা হবে।

(৮) আইনগত সত্তা

সাধারণত অংশীদারি ব্যবসায়ী নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত দুইটি ভাবে হয়ে থাকে। যদি ব্যবসার নিবন্ধন থাকে তাহলে অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। ব্যবসা নিবন্ধন করা থাকলেও কোনো ধরনের আইনগত সত্তা তৈরি হয় না। তাই এই ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবসায় অংশীদারদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

(৯) অংশীদারি ব্যবসা খারিজ

কোন কারণে কারবারি অংশীদারদের মধ্য অবিশ্বাস, বিবাদ-বচসা তৈরি হয়, তবে সেক্ষেত্রে ব্যবসার অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

(১০) দায়

মনে রাখবেন, অংশীদারি ব্যবসায়ের দায় অসীম। তাই এই ব্যবসায়ের যে কোনো পরিমান দায়ের জন্য সকল অংশীদাররা নিজে ব্যাক্তিগত এবং সমষ্টিগত ভাবে দায়বদ্ধতা থাকে।

 

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

অংশীদারি ব্যবাসায়ের গঠন এর বিষয়বস্তুঃ

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

অংশীদারি ব্যবসায়ের সুবিধা ও অসুবিধা

অংশীদারি ব্যবসায়ের সুবিধা ও অসুবিধা ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ৪র্থ অধ্যায়ের [Chapter 4] পাঠ।

 

অংশীদারি ব্যবসায়ের সুবিধা ও অসুবিধা

 

একাধিক ব্যক্তি নিজেদের পুঁজি ও সামর্থ্য একত্র করে চুক্তির ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গড়ে তোলে, তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। অন্যভাবে বলা যায়, মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে যৌথভাবে পরিচালিত ব্যবসায়ে লিপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।

 

 

অংশীদারি ব্যবসায়ের সুবিধাসমূহ

অংশীদারি ব্যবসায় সাধারণত ছোট বা মাঝারি আয়তনের হয়। এতে অংশীদারদের পারস্পরিক সহযোগিতা, সমঝোতা এরূপ ব্যবসায়ের সুবিধাগুলো আলোচনা করা হলো— এবং চিন্তাধারার সমাবেশ হয়ে থাকে। তাই, একমালিকানা ব্যবসায়ের তুলনায় এতে বাড়তি কিছু সুবিধা দেখা যায়।
১. সহজ গঠন (Easy formation): অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করা অনেক সহজ। এতে কোনো আইনগত আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয় না। ২ থেকে ২০ জন (ব্যাংকিং ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ জন) ব্যক্তি যেকোনো সময় মৌখিক বা লিখিতভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ ব্যবসায় গঠন করতে পারেন।
২. বেশি মূলধন (Large capital): একাধিক অংশীদার মূলধন সরবরাহ করায় এরূপ ব্যবসায়ে বেশি মূলধন সংগ্রহ করা যায়। প্রয়োজনে নতুন অংশীদার নিয়েও মূলধনের পরিমাণ বাড়ানো যায়। এছাড়া ব্যবসায়িক প্রয়োজনে পরিচিত লোকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েও অতিরিক্ত মূলধনের যোগান দেওয়া যায়।
৩. দক্ষ পরিচালনা (Efficient administration): অংশীদারি ব্যবসায় ব্যক্তি সামর্থ্যের সীমাবন্ধতা দূর করে। সবার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে দলগতভাবে কাজের সুযোগ পেতেই অংশীদারি ব্যবসায়ের উৎপত্তি। সাধারণত, অংশীদারদের যোগ্যতা অনুযায়ী দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলে, দক্ষতার সাথে ব্যবসায় পরিচালনা করা যায়।
৪. গণতন্ত্রের অনুশীলন (Practice of democracy): অংশীদারি ব্যবসায়ে সব সদস্যের স্বার্থ এক ও অভিন্ন হয়ে থাকে। এজন্য, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও সব অংশীদারের মত প্রকাশের সুযোগ থাকে। তাই সিন্ধান্ত দলগতভাবে নেওয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ এ ব্যবসায়ে গণতান্ত্রিক নীতিমালা অনুসরণ হয়ে থাকেন।
৫. দলবদ্ধ প্রচেষ্টা (Group effort): এরূপ ব্যবসায়ে একক ব্যক্তির আবেগ ও সীমাবদ্ধতা দূর করে সবাই মিলে। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। অংশীদারদের সম্মিলিত চেষ্টায় উক্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাও সহজ হয় । এছাড়া প্রত্যেকেই তার নিজস্ব যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জনে সচেষ্ট থাকেন।
৬. ঝুঁকি বণ্টন (Distributing risk): অংশীদাররা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ব্যবসায়ের যেকোনো ক্ষতি নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। ফলে, একক ঝুঁকির মাত্রা কমে যায়। এছাড়া, এ ব্যবসায়ে দায় অসীম হওয়ায় তারা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ব্যবসায় পরিচালনার চেষ্টা করেন।
৭. পরিচালনাগত স্বাধীনতা (Freedom in operation): সমবায় ও যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের মতো অংশীদারি ব্যবসায়ের হিসাব প্রতিবেদন আকারে বাধ্যতামূলকভাবে দাখিল করতে হয় না। পরিচালনার ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলার বাধ্যবাধকতাও নেই। ফলে অংশীদাররা স্বাধীনভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারেন।
৮. জনসংযোগের সুযোগ (Scope of public relations): এরূপ ব্যবসায়ে একাধিক মালিক থাকায় বেশি সংখ্যক লোকজনের সাথে যোগাযোগ রাখা যায়। এতে সহজেই ক্রেতা সন্তুষ্টি অর্জন ও ব্যবসায়ের সুনাম বাড়ে। ফলে সাফল্য অর্জন ও সহজ হয়।
৯. নমনীয়তার সুযোগ (Scope of flexibility): সীমিত সংখ্যক অংশীদার, পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ফলে অংশীদারি ব্যবসায়ে সহজেই প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা যায়। এতে যেকোনো ব্যবসায়িক সুযোগ কাজে লাগানো সহজ হয়।
১০. অসীম দায়ের পরোক্ষ সুবিধা (Indirect benefit for unlimited liability): এটি হলো দায়ের কারণে সতর্ক হয়ে চলার সুবিধা। অনেক ক্ষেত্রেই অসীম দায়ের সুবাদে অংশীদারগণ সতর্কতার সাথে ব্যবসায় পরিচালনা করেন। ফলে অপচয় কমিয়ে দক্ষতার সাথে ব্যবসায় চালানো সহজ হয়।
উপসংহারে বলা যায়, উল্লিখিত সুবিধাগুলো থাকায় অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রচলন ও বিস্তার বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

অংশীদারি ব্যবসায়ের অসুবিধা

অংশীদারি ব্যবসায়ের মাধ্যমে বিভিন্ন সুবিধা লাভ করা যায়। তবে, এতে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতাও দেখা যায়। এ কারণে এরূপ ব্যবসায় সব ক্ষেত্রে সফলতা পাচ্ছে না। নিচে এরূপ ব্যবসায়ের সীমাবদ্ধতাগুলো আলোচনা করা হলো:
১. অসীম দায় (Unlimited liability): অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রধান অসুবিধা হলো এর সদস্যদের দায়ের কোনো সীমা নেই। প্রত্যেক অংশীদার ব্যবসায়ের সব দেনার জন্য আলাদাভাবে দায়ী থাকেন। কোনো অংশীদার দেনা পরিশোধে অক্ষম বা দেউলিয়া হলে অন্য অংশীদাররা তার দেনা পরিশোধে বাধ্য থাকেন।
২. সীমিত সদস্য (Limited member): সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায়ে সদস্য সংখ্যা সর্বোচ্চ ২০ জন, ব্যাবিং ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ১০ জনে সীমাবদ্ধ রাখতে হয়। তাই অনেক সময় যোগ্য ও অভিজ্ঞ সদস্য নতুন করে নেওয়ার সুযোগ থাকে না। এজন্য, ব্যবসায় সম্প্রসারণের সুযোগ থাকলেও সদস্য সংখ্যা বাড়াতে না পারায় সে সুযোগ কাজে লাগানো যায় না।
৩. মূলধনের সীমাবদ্ধতা (Limitation of capital): সদস্য সংখ্যা সীমিত থাকায় ব্যবসায়ের আর্থিক সামর্থ্যও কম হয়ে থাকে। তাই, কোম্পানির তুলনায় এতে মূলধনের পরিমাণও কম হয়ে থাকে। এজন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ মূলধন সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। এতে বৃহদায়তন ব্যবসায়ের সুবিধা পাওয়া যায় না।
৪. অদক্ষ ব্যবস্থাপনা (Inefficient management): সব অংশীদারের পরিচালনায় অংশগ্রহণের অধিকার থাকায় অনেক সময় অদক্ষ এবং অযোগ্য লোক ব্যবসায় পরিচালনার সুযোগ পায়। আবার, একাধিক মালিক থাকায় সব সময় ভূ সিদ্ধান্ত নেওয়াও সম্ভব হয় না। এতে, অনেক ক্ষেত্রে অযথা সময় ব্যয় হয়। ফলে, পরিচালনায় অদক্ষতা আরও বাড়ে।
৫. আস্থা ও বিশ্বাসের অভাব (Lack of trust and faith): পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস অংশীদারি ব্যবসায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পারস্পরিক বিশ্বাসের ওপরই সাধারণত এরূপ ব্যবসায় গড়ে ওঠে। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে তাদের এই বিশ্বাস ও আস্থার পরিবর্তন হতে পারে। ফলে, ব্যবসায় পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ে।
৬. গোপনীয়তা প্রকাশ (Disclosure of secrecy): অনেক সময় কোনো অংশীদার নিজ স্বার্থে বা অসতর্কতাবশত ব্যবসায়ের গোপন বিষয় প্রকাশ করে দেয়। এতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রতিযোগীদের কাছে চলে যায়। ফলে ব্যবসায়ে ক্ষতির আশঙ্কা বেড়ে যায়।
৭. দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা (Tendency to avoid responsibility): এরূপ ব্যবসায়ে সব অংশীদারের ওপর পরিচালনার দায়িত্ব থাকে। যৌথ দায়িত্বের কারণে কখনো কখনো অংশীদারদের দায়িত্ব পালনে অনীহা দেখা দেয়। এছাড়া, অন্যের ওপর দায় চাপানোর প্রবণতাও এরূপ ব্যবসায়ে দেখা যায়। এতে, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
৮. সিদ্ধান্তে বিলম্ব (Delay in decision making): সব অংশীদারের মত অনুযায়ী অংশীদারি ব্যবসায় পরিচালনা করতে হয়। এজন্য, এরূপ ব্যবসায়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হয়। এতে, গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলে তা সম্ভব হয় না। ফলে, অনেক ব্যবসায়িক সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
৯. পৃথক সত্তার অভাব (Lack of separate entity): এ ব্যবসায় আইনসৃষ্ট নয় বলে এর পৃথক কোনো সত্তা নেই। ব্যবসায়টি নিজ নামে কোনো লেনদেন ও চুক্তি সম্পাদন করতে পারে না। এক্ষেত্রে, অংশীদারদের নামে লেনদেন ও চুক্তি সম্পাদন করতে হয়। ফলে, ব্যবসায়ের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা সৃষ্টি হয় না।
১০. মালিকানা হস্তান্তরে বাধা (Obstacles in transfer of ownership): অংশীদারি ব্যবসায়ের মালিকানা অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয়। সব অংশীদারের সম্মতি ছাড়া কোনো অংশীদার তার মালিকানা অন্য কারো কাছে হস্তান্তর করতে পারেন না। এতে ব্যবসায়ের বিলুপ্তির আশঙ্কা দেখা দেয়।
 
১১. স্থায়িত্বের অনিশ্চয়তা (Uncertainty in existence): অংশীদারদের মৃত্যু, মস্তিষ্ক বিকৃতি, দেউলিয়াত্ব, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব প্রভৃতি কারণে এরূপ ব্যবসায় যেকোনো সময় বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। ফলে এর প্রতি জনআস্থা কম থাকে।
তাই বলা যায়, অংশীদারি ব্যবসায়ে সঠিক পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের অভাব হলে এতে উল্লিখিত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। এজন্য এরূপ ব্যবসায় গঠন, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে অংশীদারদের বেশ সচেতন হতে হয়।
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রকারভেদ এর বিষয়বস্তুঃ

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রকারভেদ

অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রকারভেদ ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ৪র্থ অধ্যায়ের [Chapter 4] পাঠ।

 

অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রকারভেদ

 

একাধিক ব্যক্তি চুক্তির মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের জন্য যে ব্যবসায় গড়ে তোলে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে বাস্তব ক্ষেত্রে আমরা কয়েক ধরনের অংশীদারি ব্যবসায় দেখি। নিম্নে ব্যবসায়ের প্রকৃতি ও অংশীদারদের দায়-দায়িত্বের ভিত্তিতে এ ব্যবসায়কে কয়েকটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। যথা—

 

 

চিত্র: অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রকারভেদ

১। সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায় (General partnership business): যে অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারদের দায় অসীম এবং অংশীদারগণ একক ও যৌথভাবে দেনা পরিশোধের জন্য দায়ী থাকে তাকে সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায় বলে। এ ধরনের অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনায় সকল অংশীদারের সমান অধিকার থাকে। সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায় সকলের দ্বারা অথবা সকলের পক্ষে এক বা একাধিক অংশীদারের দ্বারা পরিচালিত। বাংলাদেশে অংশীদারি ব্যবসায় বলতে সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায়কে বুঝায়। বাংলাদেশে প্রচলিত ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন অনুযায়ী সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয় । এরূপ ব্যবসায় দু’ধরনের হতে পারে।

ক. ঐচ্ছিক অংশীদারি ব্যবসায় (Partnership at will):
১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন অনুসারে কোনো অংশীদারি চুক্তিপত্রে অংশীদারগণ ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব বা সীমানা নির্ধারণ না করলে তাকে ঐচ্ছিক অংশীদারি ব্যবসায় বলে।

আইন অনুসারে এ ব্যবসায় নিম্নোক্তভাবে গঠিত হতে পারে—
i. অনির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ব্যবসায় গঠিত হলে;
ii. নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সাধনের পরও ব্যবসায় চালু থাকলে;

iii. নির্দিষ্ট সময়ের পরও ব্যবসায় চালু থাকলে;

খ. নির্দিষ্ট অংশীদারি ব্যবসায় (Particular partnership): অংশীদারি আইনের ৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, একজন ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির সাথে একত্রে কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ বা প্রচেষ্টার জন্য অংশীদারি হিসেবে গণ্য হতে পারে। একেই নির্দিষ্ট বা বিশেষ অংশীদারি ব্যবসায় বলে ।
এরূপ ব্যবসায় দুধরনের হতে পারে—

i. নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রতিষ্ঠিত অংশীদারি ব্যবসায় (Specific term partnership): একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গঠিত অংশীদারি ব্যবসায়কে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রতিষ্ঠিত অংশীদারি ব্যবসায় বলে। এ নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হওয়ার সাথে সাথে এরূপ অংশীদারি ব্যবসায়ের বিলুপ্তি ঘটে। তবে অংশীদারগণের সম্মতিতে এ ধরনের ব্যবসায়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও চালু থাকতে পারে।

ii. নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রতিষ্ঠিত অংশীদারি ব্যবসায় (Specific Job partnership): বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কোনো অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করা হলে তাকে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সাধনের জন্য স্থাপিত অংশীদারি ব্যবসায় বলা হয়। নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অর্জিত হলে এর বিলুপ্তি ঘটে। অবশ্য সকল অংশীদার একমত হলে এরপরও চালাতে পারে।

২। সীমাবদ্ধ অংশীদারি ব্যবসায় (Limited partnership): এক বা একাধিক অংশীদারের সীমিত পরিমাণ দায়-দায়িত্ব নিয়ে যে অংশীদারি ব্যবসায় গঠিত হয় তাকে সীমাবদ্ধ অংশীদারি ব্যবসায় বলে । অর্থাৎ যদি কোনো অংশীদারের দায় অসীম না থাকে বা কোনো এক বা একাধিক সদস্যের দায় চুক্তি অনুযায়ী বা আইনগত কারণে সীমাবদ্ধ থাকে তাকে সীমাবদ্ধ অংশীদারি ব্যবসায় বলে ।

এ ব্যবসায় দু’ধরনের অংশীদার থাকে । যথা—
i. সাধারণ অংশীদার, যাদের দায় অসীম থাকে ।
ii. সীমিত অংশীদার, যাদের দায় সীমাবদ্ধ থাকে।

পরিশেষে বলা যায় যে, দেশে যেসব অংশীদারি ব্যবসায় চালু আছে তার মধ্যে সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায় বেশি। তবে এর পাশাপাশি সীমাবদ্ধ অংশীদারি ব্যবসায়েরও অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রকারভেদ এর বিষয়বস্তুঃ

 

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

ব্যবসায় পরিবেশের ধারণা

ব্যবসায় পরিবেশের ধারণা ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ২.১ অধ্যায়ের [Chapter 2.1] পাঠ।

 

ব্যবসায় পরিবেশের ধারণা

 

লাদেশের কোনো গ্রামে স্বল্পবিত্তসম্পন্ন একজন কৃষকের ঘরে একটা শিশু জন্ম নিল। এরপর তার পরিচর্যা, বেড়ে ওঠা, লেখাপড়া, জীবন-জীবিকা ও চিন্তা-ভাবনা যে ধরনের হবে ইংল্যান্ডের কোনো গ্রামে জন্ম নেয়া শিশু এবং তার পরিচর্যা, বেড়ে ওঠা, লেখাপড়াসহ সবকিছু হবে ভিন্নতর। এর পিছনে উভয়ের পারিপার্শ্বিকতা অর্থাৎ প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ইত্যাদি পরিবেশের উপাদানসমূহ ভিন্ন বাস্তবতার জন্ম দিয়েছে। এটাকে অস্বীকার করার কোনোই সুযোগ নেই ।

তাই বলা যায়, প্রতিটি মানুষ তার চিন্তা-বিশ্বাস, আচার-আচরণ, জীবন-জীবিকাসহ যে ভিন্ন ভাবধারাতে গড়ে ওঠে এর পিছনে সবচেয়ে বড় প্রভাব তার পরিবেশ। সেজন্যই বলা হয়, মানুষ আজন্ম পরিবেশের দ্বারা প্রভাবিত হয়। যেসব পারিপার্শ্বিক উপাদান ব্যবসায়কে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে তার সমষ্টিকে ব্যবসায়ের পরিবেশ । যেসব অবস্থা ব্যবসায়ের উন্নতির উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে, তাকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বলতে সাধারণত বাইরের সেসব উপাদানগুলোকে বুঝানো হয় যেগুলো প্রতিষ্ঠানের জন্য সুযোগ বয়ে আনতে পারে কিংবা ক্ষতির সৃষ্টি করতে পারে।

বর্তমান প্রতিযোগিতাপূর্ণ মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে ব্যবসায়ের সাফল্য অর্জন সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে ব্যবসায় পরিবেশের উপর । পরিবেশের উপাদানগুলো মানুষের অর্থনৈতিক কার্যাবলি এবং ব্যবসায়-বাণিজ্যকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। নিম্নে ব্যবসায় পরিবেশের উপাদানগুলো তুলে ধরা হলো:

১। প্রাকৃতিক উপাদান (Natural element) : প্রকৃতিগত কারণে যে পরিবেশ সৃষ্টি হয় তাকে প্রাকৃতিক পরিবেশ বলে। কোনো দেশের ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, প্রাকৃতিক সম্পদ, অবস্থান, আয়তন, জনসংখ্যা, নদ- নদী, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান ।
এ উপাদানসমূহের উপস্থিতি কিংবা অনুপস্থিতির দ্বারা ব্যবসায় কার্যকলাপ প্রভাবিত হয়। সে কারণেই এসব উপাদানের অনুকূল ক্ষেত্রে ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-করখানা অধিক পরিমাণে গড়ে ওঠে।

 

 

২। অর্থনৈতিক উপাদান (Economic element): “অর্থনৈতিক পরিবেশ কতকগুলো উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত যা ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা ও ব্যয়ের ধরনকে প্রভাবিত করে।” এসব উপাদানের মধ্যে রয়েছে অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ, মূলধন ইত্যাদি। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর একটি দেশের শিল্প ও বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠা ও প্রসার ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। একটি দেশের জাতীয় আয়, ভোগের পরিমাণ, উৎপাদন ও বণ্টন, গড় মাথাপিছু আয় ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে কোনো দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ। কাজেই উপরিউক্ত উপাদানসমূহ অনকূল হলে ব্যবসায় বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন সহজতর হয়।

৩। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপাদান (Social and cultural element):

 

মানুষ সমাজবদ্ধ জীবন যাপনে অভ্যস্ত। এ সমাজবদ্ধ মানুষের ধ্যান-ধারণা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি, মনোভাব ও বিশ্বাস, রীতি-নীতি, মূল্যবোধ, ধর্মীয় চেতনা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে সামাজিক পরিবেশ। ব্যবসায়-বাণিজ্যের উপর এ সামাজিক উপাদানগুলোর প্রভাব অসীম। সামাজিক পরিবেশ সহজ, সুন্দর ও অনুকূল হলে ব্যবসায় বাণিজ্য তার কাম্য লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয় ।

৪। রাজনৈতিক ও আইনগত উপাদান (Political and legal element): একটি দেশের রাজনৈতিক ও আইনগত উপাদানসমূহ ব্যবসায়ের উন্নয়ন ও বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। কোনো দেশের সরকারি নিয়ম-কানুন, আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুকূল হলে ব্যবসায়ও দ্রুতগতিতে বিকশিত হতে পারে। ঠিক তেমনি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি, বাণিজ্য নীতি, রাজস্ব নীতি, বিনিয়োগ নীতি ইত্যাদির আনুকূল্য এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

৫। তথ্য ও প্রযুক্তিগত উপাদান (Information and technological element): বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর। প্রযুক্তি যেমন মানুষের জীবনে এনেছে আধুনিকতার ছোঁয়া, বর্তমান কম্পিউটারভিত্তিক তথ্য ব্যবস্থাও তেমনি মানুষের জীবনধারাকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে।

প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞানের দ্বারা গবেষণা ও উদ্ভাবনের ফলে বিশ্ব পাচ্ছে নতুন নতুন আবিষ্কার, ক্রেতা ও ভোক্তারা পাচ্ছে নতুন নতুন পণ্য ও সেবাসামগ্রী। আবার তথ্য ব্যবস্থার অবাধ প্রবাহ ব্যবসায়-বাণিজ্য গতি সঞ্চার করতে সক্ষম হয়েছে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ ব্যতীত আজকের বিশ্বায়নের (Globalisation) যুগে ব্যবসায়-বাণিজ্যে অগ্রগতি ও উন্নয়নের প্রত্যাশা দুরাশামাত্র ।

৬। আন্তর্জাতিক উপাদান (International element): বর্তমান ব্যবসায়-বাণিজ্যের ক্ষেত্র আজ আর কেবল সীমিত গণ্ডিতে আবদ্ধ নেই। ব্যবসায় আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী তার সকল ডালপালা প্রসারিত করতে সমর্থ হয়েছে। সুতরাং ব্যবসায়ের আন্তর্জাতিক দিককে অবহেলা করার সুযোগ নেই । একটি দেশের সাথে অপর দেশের সম্পর্ক, বিশেষ করে উন্নত দেশের সাথে উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশের সম্পর্ক ব্যবসায়কে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। এছাড়া আন্তর্জাতিক চুক্তি, বিশ্ব বাণিজ্য নীতি ও বিশ্ববাজার ব্যবস্থা, প্রতিবেশি দেশসমূহের সাথে সম্পর্ক ইত্যাদি যেকোনো দেশের ব্যবসায়- বাণিজ্যে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে।

পরিশেষে বলা যায়, ব্যবসায় পরিবেশের উপরোক্ত প্রতিটি উপাদানই ব্যবসায়কে কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত করছে।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

ব্যবসায় পরিবেশের ধারণা এর বিষয়বস্তুঃ

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

জীবিকা অর্জনের উপায় হিসেবে ব্যবসা

জীবিকা অর্জনের উপায় হিসেবে ব্যবসা ” ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ১.৮ অধ্যায়ের [Chapter 1.8] পাঠ। ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র – জীবিকা অর্জনের উপায় হিসাবে ব্যবসায়।

 

জীবিকা অর্জনের উপায় হিসেবে ব্যবসা

 

কোনো বিশেষ বিদ্যায় বৃত্তিমূলক জ্ঞান আহরণ করে পারদর্শিতা ও দক্ষতা অর্জনের পর বাস্তব জীবনে তার প্রয়োগ ও ব্যবহারের দ্বারা জীবিকা নির্বাহের প্রচেষ্টাকে পেশা বলে । কোনো মানুষ তার জীবনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য কোনো কাজকে অবলম্বন করলে সেটা পেশা হিসেবে গণ্য হয়। এ দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবসায়কে পেশা বা জীবিকা অর্জনের উপায় বলতে পারি ।

 

 

কারণ একজন ব্যক্তি ব্যবসায় করে তার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক অভাবসমূহ পূরণ করছে। ব্যবসায় মানুষের জীবিকা অর্জনের অন্যতম প্রধান উপায়। যেকোনো ব্যক্তি তার স্বল্প বা বেশি মূলধন নিয়ে সহজেই ব্যবসায় করতে পারে । তাই অনেকে ব্যবসায়কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে।

ব্যবসায়ের মাধ্যমে মানুষ তার জীবনকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কেউ যদি চাকরি করে তবে সে নির্দিষ্ট বেতন পায়। সেক্ষেত্রে তার চাহিদা বা আকাঙ্ক্ষা সীমিত হয়ে থাকে। কিন্তু কেউ যদি ব্যবসায় সঠিকভাবে করতে পারে তবে সে চাকরির চেয়ে অনেক বেশি উপার্জন করতে পারবে। এখানে তার উপার্জন সীমিত থাকে না। ব্যবসায় কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একটি দেশে যত বেশি ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ ঘটবে তত বেশি মানুষের কর্মের সংস্থান হবে।

ব্যবসায় হলো স্বাধীন পেশা বা বৃত্তি। একজন ব্যবসায়ী বৈধভাবে যেকোনো ব্যবসায়ে পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারে, সেখান থেকে মুনাফা অর্জন করতে পারে, এজন্য কোনো জবাবদিহি কারও নিকট করতে হয় না । তাই স্বাধীন পেশা হিসেবে ব্যবসায়কে সবাই পছন্দ করে।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

জীবিকা অর্জনের উপায় হিসেবে ব্যবসা এর বিষয়বস্তুঃ

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

সামাজিক ব্যবসায় ও সামাজিক ব্যবসায়ের মূলনীতি

সামাজিক ব্যবসায় ও সামাজিক ব্যবসায়ের মূলনীতি ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ১.৭ অধ্যায়ের [Chapter 1.7] পাঠ।

 

সামাজিক ব্যবসায়

সামাজিক ব্যবসায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস প্রবর্তিত একশ্রেণীর অর্থনৈতিক প্রকল্প যার মূল লক্ষ্য মুনাফার পরিবর্তে মানবকল্যাণ। যে কোন সাধারণ ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠানের মতোই এই সকল প্রকল্প পরিচালিত হয় ; কেবল লক্ষ্য থাকে মানুষের কল্যাণ—বিশেষ করে দারিদ্র ও আয়বৈষম্য দূর করা।

 

 

মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৭০ দশক থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যাংকিং, টেলিকম, সৌরশক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি, টেক্সটাইল, তাঁত, বিপণন প্রভৃতি খাতে অনেকগুলো কোম্পানী স্থাপন করেছেন যেগুলোর মৌলিক উদ্দেশ্য মুনাফা ম্যাক্সিমাইজ করা নয় ; অন্যদিকে এগুলোর কোনটিই ব্যক্তিগত মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয় নি। এই উদ্যোগগুলো কার্যত সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য স্থাপিত ব্যবসায়িক প্রকল্প। এ ধরনের ব্যবসায়িক পুজিঁলগ্নির কথা ঐতিহ্যগত অর্থশাস্ত্রে নেই।

এই পরিপ্রেক্ষিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষভাগে “সামাজিক ব্যবসায়” ধারনাটি প্রবর্তন করেন। সামাজিক- ব্যবসায়ের সঙ্গে সনাতন ব্যবসায়ের পার্থক্য কেবল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মধ্যে: সনাতন ব্যবসায় মুনাফামুখী এবং সামাজিক ব্যবসায় কোম্পানি মুনাফা করবে নিশ্চয়ই, কিন্তু মালিক মুনাফা নেবে না, মালিক কেবল মূলধন ফেরত নিতে পারবে।

 

সামাজিক ব্যবসায়ের মূলনীতি

  • দারিদ্র্য বিমোচনসহ এক বা একাধিক বিষয় যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও পরিবেশগত খাতে বিরাজমান সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিগত মুনাফাহীন কল্যাণকর ব্যবসায় এটি।
  • সকলের অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন করাই এ ব্যবসায়ের লক্ষ্য।
  • সামাজিক- ব্যবসায়ে বিনিয়োগকারীরা শুধু তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থই ফেরত পাবে, এর বাইরে কোনো প্রকার লভ্যাংশ নিতে পারবে না।
  • বিনিয়োগকারী তার বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত নেয়ার পর বিনিয়োগকৃত অর্থের মুনাফা কোম্পানির সম্প্রসারণ কাজে ব্যবহৃত হবে।
  • এ ব্যবসায় হবে পরিবেশবান্ধব।
  • এখানে যারা কাজ করবেন তারা ভালো কাজের পরিবেশ ও চল
  • মান বাজার অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাবেন।
  • সামাজিক- ব্যবসায় হবে আনন্দের সাথে ব্যবসায়।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

সামাজিক ব্যবসায় ও সামাজিক ব্যবসায়ের মূলনীতি এর বিষয়বস্তুঃ

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

ব্যবসায়ের কার্যাবলী | এইচএসসি, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা

ব্যবসায়ের কার্যাবলী ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ১.৬ অধ্যায়ের [Chapter 1.6] পাঠ।

 

ব্যবসায়ের কার্যাবলী

 

মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে উৎপাদন ও বণ্টন সংক্রান্ত সকল বৈধ্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে ব্যবসায় বলে।

 

 

ব্যবসায়ের কার্যাবলী সমূহ:

  1. উৎপাদন
  2. ক্রয়
  3. বিক্রয়
  4. অর্থসংস্থান
  5. পরিবহন
  6. গুদামজাতকরণ
  7. বিজ্ঞাপন ও প্রচার
  8. বিমা
  9. হিসাবরক্ষণ
  10. প্রমিতকরণ ও পর্যায়িতকরণ
  11. পণ্যের মোড়কীকরণ
  12. বাজার গবেষণা ও পণ্য উন্নয়ন

১. উৎপাদন: যেকোনো ব্যবসায়ের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো উৎপাদন করা। আমরা জানি শিল্পকে উৎপাদনের বাহন বলা হয় অর্থাৎ শিল্পের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পণ্যদ্রব্য উৎপাদিত হয়। প্রকৃতি হতে সম্পদ আহরণ করে তা মানুষের ব্যবহারের উপযোগ সৃষ্টি করাই হলো উৎপাদন।

২. ক্রয়: ব্যবসায়ের কার্যক্রম বা উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল রাখতে বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল ও পণ্যসামগ্রী কয় করতে হয়।

৩. বিক্রয়: বিক্রয় ব্যবসায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা যার মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে পণ্যের মালিকানা হস্তান্তর করা হয়।

৪. অর্থসংস্থান: ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনার জন্য অর্থের প্রয়োজন। নিজস্ব মূলধন বা ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

৫. পরিবহন: ব্যবসায়ের উৎপাদিত পন্য সামগ্রী এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করার জন্য পরিবহন একটি বড় ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া ব্যবসায়ের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি আনা নেওয়ার জন্য পরিবহনের প্রয়োজন হয়।

৬. গুদামজাতকরণ: ব্যবসায়ের উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদামজাতকরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমরা দেখতে পাই যে এক মৌসুমের দ্রব্য অন্য মৌসুমেও পাওয়া যায় আর তা সম্ভব হয়েছে কেবল গুদামজাতকরণের প্রক্রিয়।

৭. বিজ্ঞাপন ও প্রচার: ব্যবসায়ের উৎপাদিত প্রণ্যদ্রব্য সম্পর্কে ক্রেতাদের অবহতি করা বা জানানোর জন্য বিজ্ঞাপন ও প্রচার কার্য করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমরা টেলিভিশনে দেখতে পাই, নানান ধরনের পণ্যের সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন বা প্রচার করছে। বিজ্ঞাপন পণ্যের জ্ঞানগত উপযোগ সৃষ্টি করে।

৮. বিমা: যেকোনো ব্যবসায়ে ঝুঁকি বিদ্যমান। ব্যবসাযের ঝুঁকি হ্রাস করতে বা কমাতে বিমা গ্রহণ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

৯. হিসাবরক্ষণ: ব্যবসায়ের হিসাবরক্ষণ করা একটি মৌলিক কাজ। ব্যবসায়কে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য ব্যবসায়ের দৈনন্দিন ব্যবসায়িক লেনদেনসমূহ হিসাবরক্ষণ করতে হয়।

১০. প্রমিতকরণ ও পর্যায়িতকরণ: ব্যবসায়ের পণ্যদ্রব্যের আকার, ওজন ও গুণাগুণ অনুসারে মান নির্ধান করতে হয় এবং প্রণ্যের প্রকৃতি অনুযায়ী পণ্যকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা ব্যবসায়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যেমন: বাজারে ৫০০ টাকা মূল্যের স্যম্পু পাওয়া যায় আবার ৫ টাকা মূল্যেরও স্যম্পু পাওয়া যায়। এটি করা হয় মূলত ক্রেতার ক্রয়-বিক্রয়ের সুবিধার্থে।

১১. পণ্যের মোড়কীকরণ: পণ্যের মোড়কীকরণ করা হয় মূলত পণ্যকে সুরক্ষিত রাখতে এবং ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। তাছাড়া, পণ্য মোড়কীকরণ ভিতরে পণ্য রক্ষা করার জন্য কাজ করে। যেকোনো পণ্য তৈরির মূল লক্ষ্য হল গ্রাহকদের আকর্ষণ করা এবং তাদের আপনার পণ্যটি কিনতে উৎসাহিত করা। যেহেতু ক্রেতাদের প্রথম নজর পণ্যের মোড়কীকরণের উপর পড়ে তাই পণ্যের মোড়কীকরণের কাজ খুবই আকর্ষণীয় এবং উন্নতমানের হওয়া প্রয়োজন।

১২. বাজার গবেষণা ও পণ্য উন্নয়ন: বর্তমানে ব্যবসায় খুবই প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে অর্থাৎ যে প্রতিষ্ঠান ভালো মানের পণ্য উৎপাদন করে গ্রাহকরা সেই পণ্য ক্রয়ে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে। তাই পণ্য উৎপাদনের পূর্বে বাজার গবেষণা করে পণ্যের মান উন্নয়ন করতে হবে।

 

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

ব্যবসায়ের কার্যাবলী এর বিষয়বস্তুঃ

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

প্রত্যক্ষ সেবার প্রকারভেদ | এইচএসসি, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা

প্রত্যক্ষ সেবার প্রকারভেদ ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ১.৫ অধ্যায়ের [Chapter 1.5] পাঠ।

 

প্রত্যক্ষ সেবার প্রকারভেদ

 

প্রত্যক্ষ সেবা

গ্রাহকদের প্রয়োজন পূরণে সমর্থ এমন কোনো কাজ, সুবিধা বা তৃপ্তিকে প্রত্যক্ষ সেবা বলে। মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে এরূপ কাজ বা সুবিধাকে বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপন করা নিঃসন্দেহে ব্যবসায়ের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে তা যেভাবে দৃশ্যমান থাকে এবং মালিকানা হস্তান্তরিত হয় সেবার বেলায় তাকে সেভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। এক্ষেত্রে গ্রাহক সেবা পেয়েই উপকৃত, তৃপ্ত বা সন্তুষ্ট হয়। পণ্যের মতো সে এটাকে অন্যত্র নিয়ে বিক্রয় করতে বা মালিকানা হস্তান্তর করতে পারে না।

 

প্রত্যক্ষ সেবার উদাহরণ

১. একজন ছাত্র ২০ টাকা দিয়ে বাসে চড়ে কলেজে এলো। সে ২০ টাকার বিনিময়ে উপকার বা সুবিধা লাভ করছে। এক্ষেত্রে বাস কোম্পানি সেবা বিক্রেতা।

২. একজন রোগী অপারেশনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অনেক টাকা খরচ হলো। এক্ষেত্রে হাসপাতাল কি দিয়েছে? উত্তর হলো সেবা।

এভাবে মোবাইল, ইন্টারনেট, হোটেল, বিমান, রেলওয়ে, ব্যাংক, বিমা, পর্যটনসহ হাজারো কোম্পানি সেবা বিক্রয় করে চলেছে। আর মানুষের মাথাপিছু আয় যত বাড়ছে সেবা ক্রয়-বিক্রয় ততই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

প্রত্যক্ষ সেবার বৈশিষ্ট্য

পণ্যের যেমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে তেমনি প্রত্যক্ষ সেবা ব্যবসায়েরও কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্যণীয়। নিম্নে বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করা হলো-

১. কাজ বা সুবিধা

প্রত্যক্ষ সেবা হলো কোনো কাজ, সুবিধা বা তৃপ্তি যা এর বিক্রেতা ক্রেতাদের নিকট বিক্রয়ের জন্য উপস্থঅপন করে। এরূপ সুবিধা বা কাজ প্রদানের জন্য বিক্রেতাকে মূলধনসহ ব্যবসায়ের সকল উপকরণ জোগাড় করতে হয়। একটা ক্লিনিক, এটর্নী ফার্ম, অডিট ফার্ম, সিনেমা হল, বাস কোম্পানি, ধোপা, বড়-ছোট সবাই কাজ, সুবিধা বা তৃপ্তি বিক্রয় করে মূলত মুনাফা অর্জনের প্রয়াস চালায়।

২. অস্পর্শনীয় প্রকৃতি

সেবা অনুভব করা যায়। এর দ্বারা প্রয়োজন পূরণ হয়। গ্রাহক তৃপ্তি লাভ করে। কিন্তু বিক্রয়ের পূর্বে এর স্বাদ, সুবিধা, তৃপ্তি ইত্যাদি স্পর্শ বা ছুঁয়ে দেখে-শুনে নেয়ার সুযোগ কম থাকে। যেমন- একজন শিক্ষার্থী দোকানে যেয়ে খাতা-কলম কিনে বাসায় নিয়ে মাকে দেখাতে পারে। এটা পণ্য ও দৃশ্যমান বন্তু। কিন্তু ২০ টাকা খরচ করে রিক্সায় চড়ে এসেছে এটা বাসায় গিয়ে স্পর্শনীয় বা দৃশ্যমানভাবে উপস্থাপন করা শিক্ষার্থীর পক্ষে অসম্ভব।

৩. মালিকানা হস্তান্তরযোগ্য নয়

সেবা স্পর্শনীয় ও বাস্তব কোনো বস্তু না হওয়ায় এর মালিকানা হস্তান্তরের প্রশ্ন আসে না। একজন ব্যক্তি ম্যাসাজিং সেন্টার (শরীর মালিশ করা) এ যেয়ে সেবা নিয়ে ৫০০ টাকা দিয়ে আসলো। এক্ষেত্রে সেন্টারের কর্মীর দক্ষতা ও যোগ্যতা বিক্রয় হয়ে যায়নি। অর্থাৎ সে তার দক্ষতা ও সেবা আরও অন্য গ্রাহকদেরকেও প্রদান করবে। আবার যে ব্যক্তিটি সেবা নিলো এতে তার প্রশান্তি এসেছে ঠিক কিন্তু সে তার প্রশান্তি অন্যের কাছে বিক্রয় করতে পারবে না।

৪. মজুতযোগ্য নয়

সেবা মজুতযোগ্য নয়। অর্থাৎ সেবা যখনই উৎপাদন হয় তখনই তা ভোগের প্রশ্ন আসে। ভিন্নভাবে বললে বলা যায়, ভোক্তা যখন ভোগের জন্য আসে তখনই সেবা উৎপন্ন বা প্রদানের প্রয়োজন পড়ে। যেমন- একজন নামকরা শিল্পী গান গাইবে এজন্য টিকেট বিক্রয় হলো। যে স্বশরীরে গান উপভোগ করতে চায় তাকে গানের সময় সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে। আবার বিউটি পার্লারে কর্মীরা সকল ব্যবস্থা নিয়ে বসে আছে। যখনই একজন মেয়ে গেলা তখনই সেবা দেয়ার প্রশ্ন আসছে।

৫. গ্রাহকদের কাছাকাছি প্রতিষ্ঠান

ভোগের কেন্দ্র থেকে অনেক দূরেও পণ্য উৎপন্ন হতে পারে কিন্তু সেবার বেলায় তা সম্ভব নয়। তাই গ্রাহকদের পাশেই সেবাকেন্দ্রসমূহ গড়ে ওঠে। যানবাহন মেরামত কেন্দ্র বাসস্ট্যান্ড বা এর আশেপাশে গড়ে উঠতে দেখা যায়। বিমান বন্দরের পাশে দামি হোটেল ও রেল স্টেশনের পাশে কমমূল্যের হোটেল এ কারণেই গড়ে তোলা হয়। ব্যবসায় কেন্দ্রে ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠান এ কারণেই গড়ে ওঠে।

 

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

বাণিজ্যের প্রকারভেদ এর বিষয়বস্তুঃ

 

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

বাণিজ্যের প্রকারভেদ | এইচএসসি, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা

বাণিজ্যের প্রকারভেদ ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ১.৪ অধ্যায়ের [Chapter 1.4] পাঠ।

 

বাণিজ্যের প্রকারভেদ

 

ব্যবসা – বাণিজ্য বলতে কি বুঝায়?

পণ্যদ্রব্য বণ্টন ও বিনিময় সংক্রান্ত কার্যাবলীই হল বাণিজ্য। পণ্য দ্রব্য বণ্টন ও বিনিময়ের ক্ষেত্রে কতগুলো বাধা বা অসুবিধা দেখা যায়। ঐ সকল বাধা বা অসুবিধা অতিক্রমের জন্য গৃহীত কার্যাবলিই বাণিজ্যের লক্ষ্য। এ প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, দ্রব্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তি, স্থান, ঝুঁকি, সময় এবং আর্থিক বাধাসমূহ দূরীকরণের জন্য পরিচালিত কার্যাবলীর সমষ্টিই হলো বাণিজ্য।

 

বাণিজ্যের ইতিহাস :

মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই বাণিজ্যের বিকাশ হয় এবং প্রতœতাত্তি¡ক অনুসন্ধান ও বিশে ষণ থেকে এর সত্যতা – প্রমাণিত হয়। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে প্রাচ্যের সভ্যতা সমূহে নিয়মিত বাণিজ্য হতো। বর্তমান সভ্যতার বিকাশের পর ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যাপক প্রসার লাভ করে।

পণ্যদ্রব্য বা সেবাকর্ম বিনিময় ও বণ্টন সংক্রান্ত কাজকে বাণিজ্য বলে। অর্থাৎ শিল্পের উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত গ্রাহকদের নিকট পৌঁছানোর জন্য সম্পাদিত সকল কার্যক্রমকে বাণিজ্য বলে।

বাণিজ্যের প্রকারভেদ:

 

  1. ট্রেড বা পণ্য বিনিময়
  2. ট্রেড বা পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলি

 

ট্রেড বা পণ্য বিনিময়কে আবার দুই ভাগে ভাগ করে:

  1. অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য
    ১. পাইকারি ব্যবসায়
    ২. খুচরা ব্যবসায়
  2. বৈদেশিক বাণিজ্য
    ১. আমদানি
    ২. রপ্তানি
    ৩. পুনঃরপ্তানি

 

ট্রেড বা পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলি আবার ৫ প্রকার:

 

  1. ব্যাংক
  2. বীমা
  3. পরিবহণ
  4. গুদামজাতকরণ
  5. বাজারজাতকরণ প্রসার বা বিজ্ঞাপন

 

ট্রেড বা পণ্য বিনিময়:

মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্যদ্রব্য ক্রয় বিক্রয় কার্যকে পণ্য বিনিময় বলে। ট্রেড বা পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে উৎপাদনকারী ও ভোগকারীর মধ্যে ব্যক্তিগত বা মালিকানাগত বাধা দূর করা যায়।

 

১. অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য: পণ্য দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় যখন একটি দেশের ভৌগলিক সীমানার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তখন তাকে অভ্যন্তরীন বাণিজ্য বলে।

২. বৈদেশিক বাণিজ্য: যখন এক দেশের সাথে অন্য দেশের মধ্যে পণ্য বা সেবা সামগ্রী বিনিময় করা হয় তখন তাকে বৈদেশিক বাণিজ্য বলে।

 

ট্রেড বা পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলি:

বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যবসায়কে বিভিন্ন ধরনের বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। এগুলি দূর করার জন্য ট্রেড বা পণ্য বিনিময়ের সহায়ক কাজগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন: অর্থগত বাধা দূর করে ব্যাংক, ঝুঁকিগত বাধা দূর করে বিমা, স্থানগত বাধা দূর করে পরিবহন, সময় বা কালগত বাধা দূর করে গুদামজাতকরণ, জ্ঞানগত বাধা দূর করে বিজ্ঞাপন।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

বাণিজ্যের প্রকারভেদ এর বিষয়বস্তুঃ

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

শিল্পের প্রকারভেদ | এইচএসসি, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা

শিল্পের প্রকারভেদ ” ক্লাসটি “এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) – ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র [HSC (Class 11-12) – Business Organization and Management 1st Paper]” বিষয়ের, ১.৩ অধ্যায়ের [Chapter 1.3] পাঠ।

 

শিল্পের প্রকারভেদ

 

শিল্পের প্রকারভেদ [Types of industries]

 

“শিল্প” শব্দটি অর্থনৈতিক কার্যকলাপের একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রকে বোঝায় যা পণ্য ও পরিষেবাগুলির উত্পাদন, উত্পাদন বা বিধান জড়িত। প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, অর্থ, কৃষি, পরিবহন, বিনোদন এবং আরও অনেক কিছুর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রকে জুড়ে শিল্পগুলি তাদের প্রকৃতি, সুযোগ এবং স্কেলগুলিতে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।

 

 

 

শিল্পগুলি সাধারণত তারা যে ধরণের পণ্য বা পরিষেবাগুলি অফার করে, উত্পাদনে ব্যবহৃত পদ্ধতি এবং প্রযুক্তি, তারা যে বাজারের চাহিদা পরিবেশন করে এবং তারা যে নিয়ন্ত্রক পরিবেশে কাজ করে তার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। প্রতিটি শিল্পের নিজস্ব কোম্পানী, সংস্থা এবং একই ধরনের কার্যকলাপে নিয়োজিত ব্যক্তিদের নিজস্ব সেট থাকতে পারে, সেই নির্দিষ্ট সেক্টরের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা সহযোগিতা করে।

এখানে 30 ধরণের শিল্প রয়েছে, প্রতিটিতে বিভিন্ন সেক্টর এবং অর্থনৈতিক কার্যকলাপের ক্ষেত্র রয়েছে। এখানে কিছু সাধারণ ধরণের শিল্প রয়েছে:

 

ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি:

এই শিল্পে বিভিন্ন প্রক্রিয়া, যেমন যন্ত্রপাতি, সমাবেশ লাইন এবং শ্রমের মাধ্যমে বাস্তব পণ্য উৎপাদন জড়িত। এতে অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং, ইলেকট্রনিক্স, টেক্সটাইল এবং ফুড প্রসেসিং এর মতো খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রি:

সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রি এমন ব্যবসাকে অন্তর্ভুক্ত করে যেগুলি ভৌত ​​পণ্যের পরিবর্তে অস্পষ্ট পরিষেবা প্রদান করে। এতে ব্যাংকিং, স্বাস্থ্যসেবা, আতিথেয়তা, পরিবহন, পরামর্শ এবং বিনোদনের মতো খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আর্থিক শিল্প:

এই শিল্প আর্থিক লেনদেন, বিনিয়োগ এবং আর্থিক পরিষেবা নিয়ে কাজ করে। এটি ব্যাংকিং, বীমা, বিনিয়োগ সংস্থা, স্টক মার্কেট এবং ক্রেডিট ইউনিয়নের মতো সেক্টরগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

প্রযুক্তি শিল্প:

প্রযুক্তি শিল্প প্রযুক্তিগত পণ্য এবং পরিষেবাগুলির বিকাশ, উত্পাদন এবং বিতরণের সাথে জড়িত। এতে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, টেলিকমিউনিকেশন, ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি পরামর্শের মতো খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবা শিল্প:

এই শিল্পটি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ফার্মাসিউটিক্যালস, চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক, স্বাস্থ্য বীমা প্রদানকারী এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান সহ চিকিৎসা সেবা প্রদানের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

শক্তি শিল্প:

জ্বালানি শিল্প তেল এবং গ্যাস নিষ্কাশন, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি (সৌর, বায়ু, জলবিদ্যুৎ), বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং ইউটিলিটিগুলির মতো খাতগুলি সহ শক্তির উত্পাদন এবং বিতরণের জন্য দায়ী।

খুচরা শিল্প:

খুচরা শিল্প সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পণ্য বিক্রয় জড়িত। এতে সুপারমার্কেট, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, ই-কমার্স, বিশেষ দোকান এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসার মতো সেক্টর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

নির্মাণ শিল্প:

এই শিল্প ভবন, অবকাঠামো এবং অন্যান্য ভৌত কাঠামোর নির্মাণকে অন্তর্ভুক্ত করে। এতে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক নির্মাণ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, স্থাপত্য এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনার মতো সেক্টর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

কৃষি ও খাদ্য শিল্প:

এই শিল্পের সাথে শস্য চাষ, পশুপালন এবং খাদ্য পণ্যের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং বিতরণ জড়িত। এটি কৃষি, মাছ ধরা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, এবং কৃষি যন্ত্রপাতির মতো খাতগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

পরিবহন এবং লজিস্টিক শিল্প:

এই শিল্প পণ্য এবং মানুষের চলাচল এবং পরিবহনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এতে শিপিং, লজিস্টিক কোম্পানি, এয়ারলাইন্স, রেলওয়ে, ট্রাকিং এবং গুদামজাতকরণের মতো খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

স্বয়ংচালিত শিল্প:

এই শিল্পে অটোমোবাইল এবং সংশ্লিষ্ট অংশগুলির নকশা, উত্পাদন এবং বিক্রয় জড়িত। এতে গাড়ি প্রস্তুতকারক, সরবরাহকারী, ডিলারশিপ এবং আফটার মার্কেট পরিষেবার মতো সেক্টর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা শিল্প:

এই শিল্পটি বিমান, মহাকাশযান এবং প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত সরঞ্জামগুলির উত্পাদন নিয়ে কাজ করে। এতে মহাকাশ প্রকৌশল, সামরিক প্রযুক্তি এবং মহাকাশ অনুসন্ধানের মতো খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

রাসায়নিক শিল্প:

রাসায়নিক শিল্প শিল্প রাসায়নিক, ফার্মাসিউটিক্যালস, সার এবং বিশেষ রাসায়নিক সহ রাসায়নিকের উত্পাদন এবং বিতরণের সাথে জড়িত।

মিডিয়া এবং বিনোদন শিল্প:

এই শিল্পটি টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, প্রকাশনা, গেমিং এবং ডিজিটাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম সহ মিডিয়া বিষয়বস্তু তৈরি, উত্পাদন এবং বিতরণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

শিক্ষা শিল্প:

শিক্ষা শিল্প শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম এবং শিক্ষামূলক পরিষেবাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, টিউটরিং পরিষেবা এবং শিক্ষাগত প্রযুক্তির মতো সেক্টরগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

পর্যটন এবং আতিথেয়তা শিল্প:

এই শিল্পে ভ্রমণ, বাসস্থান এবং অবসর কার্যক্রম সম্পর্কিত পরিষেবা জড়িত। এটি হোটেল, রিসর্ট, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর, রেস্তোরাঁ এবং বিনোদন স্থানের মতো সেক্টর অন্তর্ভুক্ত করে।

রিয়েল এস্টেট শিল্প:

রিয়েল এস্টেট শিল্প আবাসিক, বাণিজ্যিক এবং শিল্প রিয়েল এস্টেট সহ সম্পত্তিগুলির বিকাশ, বিক্রয় এবং পরিচালনার সাথে সম্পর্কিত। এটি রিয়েল এস্টেট এজেন্সি, সম্পত্তি বিকাশকারী, নির্মাণ কোম্পানি, এবং সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ফার্মের মতো সেক্টরগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

টেলিযোগাযোগ শিল্প:

এই শিল্প টেলিফোন, ইন্টারনেট, ওয়্যারলেস এবং স্যাটেলাইট যোগাযোগ সহ যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং পরিষেবাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি টেলিযোগাযোগ প্রদানকারী, নেটওয়ার্ক অবকাঠামো কোম্পানি, এবং টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকদের মত সেক্টর অন্তর্ভুক্ত করে।

পরিবেশগত শিল্প:

পরিবেশগত শিল্প পরিবেশ সংরক্ষণ, স্থায়িত্ব এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সমাধান এবং পরিষেবাগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এটি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, পুনর্ব্যবহারযোগ্য, পরিবেশগত পরামর্শ এবং পরিবেশ প্রযুক্তির মতো খাতগুলি অন্তর্ভুক্ত করে।

ফার্মাসিউটিক্যালস এবং বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি:

এই শিল্পে ফার্মাসিউটিক্যালস, বায়োটেকনোলজি পণ্য এবং চিকিৎসা ডিভাইসের গবেষণা, উন্নয়ন এবং উৎপাদন জড়িত। এতে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি, বায়োটেক ফার্ম, গবেষণা ল্যাবরেটরি এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকদের মতো খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

খনি ও নিষ্কাশন শিল্প:

এই শিল্পে পৃথিবী থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন খনিজ, আকরিক, কয়লা, তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস আহরণ জড়িত। এটি খনির কোম্পানি, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান, খনন এবং নিষ্কাশন সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকের মতো খাতগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

ফ্যাশন এবং পোশাক শিল্প:

এই শিল্পটি পোশাক, আনুষাঙ্গিক এবং ফ্যাশন-সম্পর্কিত পণ্যগুলির নকশা, উত্পাদন এবং বিতরণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এটি ফ্যাশন ডিজাইন, পোশাক উত্পাদন, খুচরা পোশাকের দোকান এবং ফ্যাশন ই-কমার্সের মতো সেক্টরগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

খেলাধুলা এবং বিনোদন শিল্প:

এই শিল্পটি স্পোর্টস লিগ, দল, সুবিধা এবং সম্পর্কিত পরিষেবাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি পেশাদার ক্রীড়া সংস্থা, ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক, ক্রীড়া ইভেন্ট এবং পরিচালনা, ফিটনেস কেন্দ্র এবং বিনোদনমূলক কার্যকলাপের মতো সেক্টরগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) শিল্প:

R&D শিল্প বৈজ্ঞানিক গবেষণা, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং উদ্ভাবনের সাথে জড়িত। এর মধ্যে রয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান, গবেষণাগার, প্রযুক্তি উন্নয়ন কোম্পানি এবং গবেষণা ও উন্নয়ন পরামর্শের মতো খাত।

অলাভজনক এবং সামাজিক পরিষেবা শিল্প:

এই শিল্পে এমন সংস্থা এবং পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা সামাজিক, মানবিক এবং পরিবেশগত সমস্যাগুলিকে মোকাবেলা করে। এটি অলাভজনক সংস্থা, দাতব্য ফাউন্ডেশন, সম্প্রদায় উন্নয়ন, এবং সামাজিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপের মতো সেক্টরগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

আইনি এবং আইন পরিষেবা শিল্প:

এই শিল্প আইন সংস্থা, অ্যাটর্নি, আইনি পরামর্শদাতা এবং আইনি সহায়তা পরিষেবাগুলি দ্বারা প্রদত্ত আইনি পরিষেবাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। এতে কর্পোরেট আইন, মোকদ্দমা, বৌদ্ধিক সম্পত্তি এবং আইনি গবেষণার মতো খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিজ্ঞাপন এবং বিপণন শিল্প:

এই শিল্প বিজ্ঞাপন প্রচারাভিযান, বিপণন কৌশল এবং মিডিয়া চ্যানেলের মাধ্যমে পণ্য, পরিষেবা এবং ব্র্যান্ডের প্রচারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এটি বিজ্ঞাপন সংস্থা, ডিজিটাল বিপণন সংস্থা, জনসংযোগ সংস্থা এবং বাজার গবেষণার মতো সেক্টরগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

বীমা শিল্প:

বীমা শিল্প ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক সুরক্ষা পরিষেবা প্রদান করে। এতে বীমা কোম্পানি, আন্ডাররাইটার, ব্রোকার এবং বীমা এজেন্টের মতো সেক্টর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

হিউম্যান রিসোর্স (এইচআর) ইন্ডাস্ট্রি:

এই শিল্পে নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, কর্মচারীর সুবিধা এবং কর্মশক্তি ব্যবস্থাপনা সহ মানব পুঁজির ব্যবস্থাপনা জড়িত। এতে এইচআর পরামর্শ, নিয়োগ সংস্থা এবং এইচআর সফ্টওয়্যার সরবরাহকারীদের মতো সেক্টর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

নবায়নযোগ্য শক্তি শিল্প:

এই শিল্পটি সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি, জলবিদ্যুৎ এবং ভূ-তাপীয় শক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তির উত্সগুলির উত্পাদন এবং ব্যবহারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এটি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বিকাশকারী, সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রকল্প অর্থায়নের মতো সেক্টরগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

এগুলি এমন শিল্পের অতিরিক্ত উদাহরণ যা অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিটি শিল্পের নিজস্ব স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, ব্যবসায়িক মডেল এবং সমাজ ও পরিবেশের উপর প্রভাব রয়েছে।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

শিল্পের প্রকারভেদ এর বিষয়বস্তুঃ

 

আরও পড়ূনঃ

সংগঠন এর ভুমিকা

 

 

বিজনেস লেসন, বিজনেস কোর্স, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, বিজনেস ডিগ্রী, ব্যবসার নাম, বিজনেস প্ল্যান, বিজনেস আইডিয়াস, বিজনেস গেম

Exit mobile version